নিউজ ডেস্ক : সোহওয়ার্দী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রিফাত হাসান হত্যা মামলার আসামীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। হত্যাকারীদের অব্যাহত হুমকির মুখে নিহত শিক্ষার্থীর সাংবাদিক পিতা ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
নিরাপত্তা চেয়ে রূপগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরী দায়ের করার পরও আসামীরা বীরদর্পে এলাকায় যাতায়াত করছে। ঘটনার প্রায় একমাস পেরিয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার করছে না। নিহতের পরিবার, স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ, সুশীল সমাজ, এলাকাবাসী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা ক্ষোভে ফুঁসে উঠছেন।
আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে আসামীদের গ্রেফতার করা না হলে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধসহ বড় ধরণের কর্মসূচীর আলমিটামের ঘোষণা দিয়েছেন।
নিহতের শিক্ষার্থীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ জুলাই রাতে রিফাত হাসানকে একই এলাকার তার বন্ধু রিফাত ভূঁইয়া বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে বরপা বাগান বাড়ি এলাকায় নিয়ে স্থানীয় সন্ত্রাসী নাহিদ মিয়াসহ তাদের বাহিনী কানে রড দিয়ে ও ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে দেয়। ‘সড়ক দূর্ঘটনার মৃত্যু হয়েছে’ এমন নাটক সাজাতে তড়িঘড়ি করে রিফাত হাসানকে সন্ত্রাসী বাহিনী পাশ্ববর্তী ইউএস বাংলা হাসপাতালে ভর্তি করে পালিয়ে আসে। খবর পেয়ে নিহতের পরিবার ইউএস বাংলা হাসপাতাল থেকে মুমূর্ষ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পরের দিন নিহতের পিতা দৈনিক ভোরের কাগজের সাংবাদিক নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে আসামীরা সাংবাদিক ও তার পরিবারকে অব্যাহতভাবে হুমকি প্রদান করছে। মামলা তুলে না নিলে নিহতের মতো তার ছোট দুই ভাই মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের একাদশে ভর্তিচ্ছুক রিয়াজুল ইসলাম ও বরপা নুরুউদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীর ছাত্র মাহিনকে একই অবস্থা করার হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে। বর্তমানে সাংবাদিক পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। হুমকির ঘটনায় নিহতের পিতা নজরুল ইসলাম গত এক সপ্তাহ আগে রূপগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরী দায়ের করেন।
নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসীরা জানান, আসামীরা প্রায় দিনই এলাকায় এসে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। পুলিশের কোন ভূমিকা না থাকায় আসামীরা বীরদর্পে এলাকায় এসে আড্ডা দিচ্ছে। এলাকায় বলে বেড়াচ্ছেন ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে মামলা নিষ্পত্তি করে ফেলেছে। এদিকে, হত্যা মামলার এক মাস না পেরোতেই রূপগঞ্জ থানার ওসি মামলাটি জেলা গোয়ান্দার কাছে হস্তান্তর করেছেন। এরপর থেকে নিহতের পরিবার, স্বজন ও এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দেয়।
শিক্ষার্থী রিফাত হাসানের পিতা নজরুল ইসলাম বলেন, আসামী গ্রেফতারে পুলিশ তেমন কোন ভূমিকা দেখায়নি। আমি বাদী, কিন্তু আমাকে না জানিয়ে তড়িঘড়ি করে কেন মামলা নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দার কাছে পাঠালো সেটা নিয়ে রহস্যজনক মনে হচ্ছে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মাহমুদুল হাসান বলেন, পুলিশ সুপারের নির্দেশে মামলাটি জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।