নিউজ ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অবাধে চলছে সড়কের নিষিদ্ধ ইছারমাথা (ট্রাক্টর)। ট্রাক্টরের ইঞ্জিনের সামনে ও পেছনে দুটি করে মোট চারটি চাক্কা রয়েছে। তাই এই ট্রাক্টর গুলো সাধারণ মানুষের কাছে ইছারমাথা হিসেবে পরিচিত।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রূপগঞ্জ উপজেলার ভোলাব ইউনিয়ন, দাউদপুর ইউনিয়ন, মুড়াপাড়া ইউনিয়ন ও কাঞ্চন পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় নিময়নীতির তোয়াক্কা না করে ট্রাক্টর দিয়ে পণ্য পরিবহন করা হচ্ছে। যার ফলে ওভারলোডের কারণে সড়ক নির্মাণের অল্প সময়ের মধ্যে সড়ক ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। ট্রাক্টরের বেপরোয়া গতির কারণে ঘটছে দুর্ঘটনা। এবরোখেবরো সড়কে গাড়ি চলাচলে দেখা দিয়েছে শব্দ ও বায়ুদূষণ। এছাড়া এ ইছারমাথাগুলো (ট্রাক্টর) যেদিক দিয়ে চলাচল করে সে রাস্তাটি ধূলায় ধূসরময় হয়ে পড়ে। ফলে সড়কে শিশু, বৃদ্ধ ও শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কেউ নিজেকে নিরাপদ বোধ করছে না। এখনই সড়কে অবৈধ ইছারমাথা (ট্রাক্টর) চলাচল বন্ধ করা না গেলে সামনে আরো দুর্ঘটনা ও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন সচেতন ব্যক্তিরা।
সরেজমিতে গিয়ে দেখা যায়, রূপগঞ্জ উপজেলার ভোলাব ইউনিয়ন, দাউদপুর ইউনিয়ন, মুড়াপাড়া ইউনিয়ন ও কাঞ্চন পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় অবাধে চলছে ইছারমাথা (ট্রাক্টর)। ইছারমাথা (ট্রাক্টর) এর ইঞ্জিনের সামনে ও পেছনে দুটি করে মোট চারটি চাকা রয়েছে। ইছারমাথার (ট্রাক্টর) পেছেনে লোহার পিনের সঙ্গে আটকানো আছে দুই চাকার ট্রলি। শক্তিশালী ইঞ্জিনের ইছারমাথা (ট্রাক্টর) গুলো দিয়ে সবচেয়ে বেশি ইটভাটার মাটি, ইট, বালি, সিমেন্ট পরিবহনের কাজে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ইছারমাথা (ট্রাক্টর) দিয়ে দোকানের পণ্য ও বাসাবাড়ির আসবাপত্র ও ফার্নিচার, গাছ আনা নেওয়া কাজে ব্যবহার করা হয়। বেহালদশার কারণে সড়কে গাড়ি চলাচলে বাড়ছে শব্দ ও বায়ুদূষণ। সেই সাথে ট্রাক্টরের বেপরোয়া গতির কারণে ঘটছে দুর্ঘটনা। প্রতি বছর নিহতের খাতায় যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুস নাম। তাছাড়া বায়ু দূষণজনিত কারণে মানুষ ভুগছে শ্বাসকষ্টে। সঠিক নজরদারির অভাবে থামছে না অবৈধ যান চলাচল। স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ মার্চ দাউদপুর ইউনিয়নের বীরহাটাব এলাকায় ইছারমাথা (ট্রাক্টর) এর ধাক্কায় তানভীর (১৬) নামে এক অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। এ অবৈধ ইছারমাথার (ট্রাক্টর) কারণে সড়কে বাড়ছে দূর্ঘটনা।
নিহত তানভীরের বাবা জামান মিয়া জানান, সড়কে অবৈধ ইছারমাথা (ট্রাক্টর) প্রশাসন বেশকয়েকবার বন্ধ করলেও রাস্তায় এগুলো পূনরায় চলাচল করছেন। তার ছেলে তানভীরের মতো যাতে আর কেউ অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে না পড়ে এ কারনে রাস্তায় এ ধরনের অবৈধ যান চলাচল বন্ধ হওয়া উচিত।
কথা হয় আব্দুস সবুর মিয়া নামে একজনের সাথে তিনি বলেন, প্রথম দিকে ইছারমাথার (ট্রাক্টর) গুলো জমির চাষের জন্য কেনা হলেও এখন হচ্ছে তার উল্টো কাজ। ট্রাক্টরের পেছনে ট্রলি লাগিয়ে টানা হচ্ছে ইটভাটার মাটি, ইট, বালি, সিমেন্ট, দোকানের মালামাল ও ঘরবাড়ির ফার্নিচার। ইছারমাথাগুলো (ট্রাক্টর) ছোট ছেলে -মেয়েদের জন্য একটি আতংক। ইছারমাথা (ট্রাক্টর) শিক্ষার্থীদের জন্য একটি আতঙ্কের নাম।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহ্ নূসরাত জাহান বলেন, সড়কের নিষিদ্ধ ইছারমাথা (ট্রাক্টর) বন্ধে বেশকয়েকবার অভিযান চালানো হয়েছে। সড়কে যাতে করে ইছারমাথা (ট্রাক্টর) চলাচল করতে না পারে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।